স্বপ্নের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়
১৩ অক্টোবর ২০২৪, ১২:০৫ এএম | আপডেট: ১৩ অক্টোবর ২০২৪, ১২:০৫ এএম
শিক্ষার অন্যতম বাতিঘর, শিক্ষার্থীদের স্বপ্নের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আজ ১৬তম বর্ষপূর্তি। ২০০৮ সালের ১২ অক্টোবর রংপুরে এ বিদ্যাপীঠটির আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। নানা সীমাবদ্ধতা পেরিয়ে আজ দেশের অন্যতম উচ্চশিক্ষা কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এটি। রংপুরবাসীর দীর্ঘদিনের প্রতিক্ষার অবসান ঘটিয়ে উচ্চশিক্ষার নতুন দ্বার উন্মোচন করেছে।
প্রথম উপাচার্য অধ্যাপক ড. লুৎফর রহমানের নেতৃত্বে রংপুর টিচার্স ট্রেনিং কলেজের একটি পরিত্যক্ত ভবনে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়। মাত্র ৩০০ শিক্ষার্থী, ১২ জন শিক্ষক এবং ৬টি বিভাগ দিয়ে শুরু হওয়া এই বিশ্ববিদ্যালয় আজ দেশের অন্যতম উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা কেন্দ্র হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। ২০১১ সালে ৭৫ একর জায়গায় স্থায়ী ক্যাম্পাসের উদ্বোধন করা হয়, যা উত্তরবঙ্গের অন্যতম দৃষ্টিনন্দন ক্যাম্পাস হিসেবে খ্যাত। দ্বিতীয় উপাচার্য ড. আবদুল জলিল মিয়ার নেতৃত্বে ব্যাপক অবকাঠামো উন্নয়ন ও জনবল নিয়োগ সম্পন্ন হয়। ২০০৯ সালে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে বেগম রোকেয়ার নামে নামকরণ করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দেশ-বিদেশে তাদের মেধার স্বাক্ষর রাখছে। ২০২৩ সালে সিমাগো র্যাংকিংয়ে দেশের সেরা ১১টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে স্থান লাভ এবং গবেষণায় তৃতীয় স্থান অর্জন এই সাফল্যের প্রমাণ। বর্তমানে ২২টি বিভাগ, ৮৫০০ শিক্ষার্থী, ২০৫ জন শিক্ষক এবং ৪৪৯ জন কর্মচারীর সমন্বয়ে ক্যাম্পাসটি একটি গতিশীল শিক্ষার পরিবেশ তৈরি করেছে। তৃতীয় উপাচার্য ছিলেন অধ্যাপক ড. এ কে এম নূর উন নবী এবং চতুর্থ ছিলেন অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ।
২০২৪ সালের ১৬ জুলাইয়ে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ইংরেজি বিভাগের মেধাবী শিক্ষার্থী আবু সাঈদ পুলিশের গুলিতে নিহত হয়। তার এভাবে জীবন দেয়ার সাহসী ঘটনা আন্দোলনটি এক অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে দেয়। শিক্ষার্থীরা বৈষম্য ও অবিচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে তাদের ন্যায্য দাবি আদায়ে সোচ্চার হয়। আবু সাঈদের এই আত্মত্যাগ কেবল এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নয়, গোটা দেশের শিক্ষার্থীদের মধ্যে একটি নতুন চেতনার জন্ম দেয়। তার মৃত্যুতে পুরো দেশে আন্দোলনের ঝড় ওঠে, ফলে স্বৈরাচারের পতন ঘটে।
আবু সাঈদের ত্যাগ এবং শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের ফলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নতুন করে পুনর্গঠিত হয় এবং এর নেতৃত্বের দায়িত্ব নেন অধ্যাপক ড. মো. শওকাত আলী। তার নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়টি একাডেমিক ও প্রশাসনিক ক্ষেত্রে পুনরায় নতুন গতিতে এগিয়ে চলেছে।
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ইতোমধ্যে দেশ-বিদেশে নিজেদের যোগ্যতার স্বাক্ষর রেখে চলেছে। উচ্চশিক্ষার জন্য অনেকেই বিদেশে পাড়ি জমিয়েছে এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও সাফল্য অর্জন করেছে। অবকাঠামো সংকট, শিক্ষক স্বল্পতা এবং আর্থিক সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও প্রতিষ্ঠানটি সেশনজট মুক্ত একটি বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে সুনাম অর্জন করেছে। ভালো শিক্ষক ও গবেষক নিয়োগের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়টি আরও সফলতার শিখরে পৌঁছাবে, এটাই আমাদের আশা। মানসম্মত শিক্ষা ও গবেষণার মাধ্যমে দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলার লক্ষ্যে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় তার অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখবে এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দেশের সুনাম বৃদ্ধি করতে সক্ষম হবে, এই কামনাই করি।
লেখক: সহযোগী অধ্যাপক ও সাবেক বিভাগীয় প্রধান, মার্কেটিং বিভাগ, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর
E-mail: [email protected]
বিভাগ : সম্পাদকীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
মাগুরার শালিখায় অজ্ঞাত বৃদ্ধার লাশ উদ্ধার
আমরা আল্লাহর উপরে ভরসা করি আর হাসিনার ভরসা ভারতে -দুলু
বাংলাদেশের গুমের ঘটনায় ভারতের সম্পৃক্ততা খুঁজে পেয়েছে কমিশন
২০২৫ সালের মধ্যে নির্বাচনের পক্ষে মত বিএনপির যুগপৎ সঙ্গীদের
ঢাকায় ‘হযরত ফাতিমা জাহরা (সা.আ.) বিশ্বের নারীদের আদর্শ’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত
চার ভাগে ফিরবেন ক্রিকেটাররা
চাঁদাবাজদের ক্ষমতায় আসতে দেবেন না: হাসনাত
এমএ আজিজ স্টেডিয়ামের বরাদ্দ পেল বাফুফে
ইজতেমা মাঠকে যারা খুনের মাঠে পরিণত করেছে তারা সন্ত্রাসী
আসছে ভিভোর এক্স সিরিজের নতুন ফ্ল্যাগশিপ
বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে ২ ভারতীয় নাগরিককে স্বদেশে ফেরত
মুন্সীগঞ্জে বিএনপি’র দু পক্ষে সংঘর্ষ,৩ জন গুলিবিদ্ব সহ আহত ১০
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে সাকিব-তামিমকে পাওয়া যাবে: ফারুক
ইজতেমা মাঠে হত্যাযজ্ঞে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার করুন
কলাপাড়ায় অটোরিকশা উল্টে শিশুর মৃত্যু
আগামীকাল পঞ্চগড়ে বিএনপির জনসমাবেশ
ব্যাক্তিস্বার্থ পরিহার করে, দেশ ও দলের স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে: ইলিয়াস পাটোয়ারী
সখিপুরে বিদ্যুৎষ্পৃষ্টে ডিস ব্যবসায়ীর মৃত্যু
যারাই সুযোগ পেয়েছে তারাই দেশের সাথে বেঈমানী করেছে: ডা. মু. তাহের
পঞ্চমবারের মতো অনুষ্ঠিত হলো মৌমাছি ও মধু সম্মেলন